‘শেষ বিকেলের রোদ্দুর’ বই এর রিভিউ


শেষ বিকেলের রোদ্দুর
                       ----জাকিয়া ইসলাম
রিভিউ লেখকঃ মমিন শিকদার , মোহম্মদপুর, ঢাকা।
প্রকাশকঃ মহাকাল
‘শেষ বিকেলের রোদ্দুর’ বই টি কিছু সংখ্যক ছোট ছোট গল্পগুচ্ছ নিয়েই রচিত। গল্পগুচ্ছ গুলি একেক টির একেক রকম ভাবার্থক কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আর সহজ ও সহজাতভাবে প্রতিটি গল্পকেই লেখক সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন। লেখক বইটিতে অনেক সুন্দর বাচনভঙ্গি, সহজ-সরল, স্বচ্ছন্দ ও গতিময় ভাষায়, কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনার বিন্যাস, চমকপ্রদ নাটকীয়তা, বৈচিত্র্যময় ও বিশ্বাসযোগ্য চরিত্র সৃষ্টি এবং গভীর অন্তর্দৃষ্টি যুগ উপযোগী বর্তমানের সাথে মিলিয়ে অনেক সুন্দর কিছু লেখা উপহার দিয়েছেন তার পাঠকদের জন্য।
পাতায় পাতায় বাঁক আর রহস্যে ভরা ৬৩ পৃষ্ঠা আর ১১ টি গল্পের এই বইটি হতে পারে আপনার নতুন এক রহস্যময় অভিজ্ঞতা....
গল্পগুলো হলোঃ
  • মেয়েটির নাম ছিল ঋতু
  • একটি ভ্রূণের ইতিকথা
  • রানী এবং একটি যুদ্ধের গল্প
  • দ্বিচারিণী
  • প্রিয়ন্তী এবং একটি ভালোবাসার মৃত্যু
  • মেহেরুননেছা
  • কালো বিড়াল
  • হিয়ার মাঝে
  • কাঁদালে যখন
  • আদুরী
  • তিন পুরুষ
মেয়েটির নাম ছিল ঋতুঃ
পিউ ও ঋতু দুই বোন। ঋতু সব সময় পিউর সাথে সাথে থাকে, পিউর সারাদিনের সকল কাজকর্ম দূর থেকে অবলোকন করে সে। পিউকে সব সময় বিভিন্ন আদেশ উপদেশ দিয়ে থাকে, কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারে না পিউ। বাবা মার প্রতিও রয়েছে তার অনেক অনেক ভালোবাসা অভিমান।ঋতু সবকিছু প্রকাশ করলেও তার ভালবাসার মানুষগুলো তা কিছুই বুঝতে পারে না। আর কিভাবেই বুঝবে? ঋতু তো থাকেন ওপারে। ঋতু চরিত্রটি কাল্পনিক হলেও লেখক যেভাবে তা উপস্থাপন করেছেন যা বাস্তবের মতোই মনে হবে…….
একটি ভ্রূণের ইতিকথাঃ
সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়, লেখক এখানে এই অসাধারণ গল্পের মাধ্যমে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে তা বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন।রীথ এবং আরমানের প্রেমের গল্পের মাধ্যমে তা যথেষ্ট পরিমাণে ফুটে উঠেছে । গল্পটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, আছে সময়কে কেন মূল্য দিতে হয়, ত্যাগের উজ্জ্ল দৃষ্টান্ত………
রানী এবং একটি যুদ্ধের গল্পঃ
গল্পটি সত্যিই একটি অন্যরকম গল্প। যেখানে ভুল মানুষকে ভালোবাসা, সে ভালোবাসা কি টিকিয়ে রাখা,  সেই ভালোবাসাকে অন্যের কাছে সোপর্দ করা, নিজের ভালোবাসাকে ত্যাগ করা, এটা সত্যিই অনেক কষ্টের। তবে এ ভালোবাসা গুলো বেঁচে থাকে অনেকের মাঝে,  হয়তো কেউ প্রকাশ করতে পারে না,  যেটা না জানা সেটা না জানাই থাক এভাবেই কিছু মানুষ কাটিয়ে দেয় অনেক দিন, কাল, বছর……..
দ্বিচারিণীঃ
প্রমা রাজনকে ভালোবাসতো কিন্তু প্রমার  বিয়ে হয় জাবের এর সাথে। রাজনের জাবের দুজন বন্ধু। বিয়ের অনেক বছর পরে রাজন হঠাৎ একদিন জাবের এর বাসায়,  জাবের বাসায় ছিল না, বাসায় ছিল জাবেরের স্ত্রী, মানে রাজনের সাবেক প্রেমিকা প্রমা!! রাজন প্রমা অনেক বছর পরে মুখোমুখি। সেই রাতে তাদের প্রনয়ের ফসল হিসেবে জন্ম নেয় প্রমার দ্বিতীয় সন্তান প্রত্যাশা। তারই ১৮ বছর পরে সেই প্রত্যাশা সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রাজনের সন্তান হৃদয়ের সাথে। সেই সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় এরকম নাটকীয় ঘটনার নিয়েই সামনে এগোতে থাকে গল্পটির………
প্রিয়ন্তী এবং একটি ভালোবাসার মৃত্যুঃ
প্রিয়তি লেখক এর একটি অনন্য সৃষ্টি। রায়ান নামের এক ছেলেকে সে ভুল করেই ভালোবেসে ফেলে। একটা সময় রায়হানের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়েতে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পরে তার দাম্পত্য জীবন কখনোই  সুখের ছিলনা। শ্বশুরবাড়ি নামক এক কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সে। সেখানে তার ভালোবাসা এবং তার স্বপ্নগুলো মৃত্যুতে পরিণত হয়। তবে গল্পের শেষ প্রান্তে এসে একটি হ্যাপি ইন্ডিং হয়। গল্পটা বাস্তব জীবনের সাথে কেন জানি পুরোপুরি ভাবে মিলে যেতে চাচ্ছে........

লেখক পরিচিতিঃ
জাকিয়া ইসলাম
বাবা প্রয়াত  মোহাম্মদ ফজলে উদ্দিন ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা আর মা প্রয়াত আয়েশা আক্তার।জাকিয়া ইসলামের জন্ম ঢাকার রামপুরায় এক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক।স্বামী মোঃ রফিকুল ইসলাম সরকারি কর্মকর্তা। বিবাহিত জীবনে তিনি এক কন্যা এবং এক পুত্র সন্তানের জননী। এটি তার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ। ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম ছোট গল্পের বই ‘জীবনের গল্প’ প্রকাশিত হয়েছে।
About Momin Sikder (Click)



Comments

Popular posts from this blog

ভালো থাকার মিথ্যে অভিনয় করে যাচ্ছি ?

অধরা কে জন্ম দিনের শুভেচ্ছা